রমজান মাসে সহজ পদ্ধতিতে কুরআন খতম দেয়ার উপায়
রমজানে যা করনীয় আমরা যখন এ মাসের গুরুত্ব অনুভব করলাম তখন আমাদের কর্তব্য হয়ে দাঁড়াল কীভাবে এ মাসের প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগানো যায় সে প্রচেষ্টা চালানো। এ মাসে হেদায়াতের আলোকবর্তিকা আল-কুরআন নাজিল হয়েছে। এ মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়। এ মাসে জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। শয়তানকে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়। একজন ঘোষণাকারী ভাল কাজের আহ্বান জানাতে থাকে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলে। সাথে সাথে এটা হল মাগফিরাতের মাস, জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাস। এ মাসে রয়েছে লাইলাতুল কদর যা হাজার মাস থেকে শ্রেষ্ঠ। আমাদের অনেকের ধারণা রমজান মাস সিয়াম পালন ও তারাবীহ আদায়ের মাস। ব্যাস ! আর কীসের আমল ? দিনের বেলা পানাহার থেকে বিরত থাকছি এটা কম কি? না, ব্যাপারটা শুধু এ টুকুতে সীমিত নয়। রমজান একটি বিশাল বিদ্যাপীঠ। এ রমজানে আমরা কি কি নেক আমল করতে পারি তার মধ্যে একটি আমাল হল আল-কুরআন অর্থসহ বুঝে বুঝে খতম বা তিলাওয়াত করা।
নাবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :—
الصيام والقرآن يشفعان للعبد يوم القيامة
অর্থ: সিয়াম ও কুরআন কেয়ামতের দিন মানুষের জন্য সুপারিশ করবে।
হাদিসে এসেছে, রমজানে জিবরাইল রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে কুরআন পাঠ করে শোনাতেন। আর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পূর্ণ কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে জিবরাইলের কাছে তুলে ধরতেন। আল-কুরআন তিলাওয়াত হল সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির। সিয়াম পালনকারী এ জিকির থেকে বঞ্চিত থাকতে পারেন না।
আর তাই যারা এই পবিত্র মাস রামাদানে আল কুরআন খতম ও তিলাওয়াত করতে চান তারা প্রতিদিন কিভাবে এবং কতটুকু করে পড়লে পবিত্র মাস রামাদানে আল্লাহর পবিত্র কালাম আল কুরআন পাঠ শেষ করতে পারবেন, সেই বিষয়ে একটি সুন্দর কৌশল শিখাবো। আশাকরি আমাদের এই ছোট্ট প্রচেষ্টা আপনাদের উপকারে আসবে ইনশাহআল্লাহ।
উদ্দেশ্য:
রামাদান পুরা কুরআন অর্থ সহ বুঝে পড়া বা তেলাওাত করা।
কি ভাবে করবেন:
প্রতিদিন ৪ পৃষ্ঠা করে প্রত্যেক নামাযের পরে পড়ুন। অবশ্যই চেষ্টা করবেন বুঝে পড়ার।
৫ ওয়াক্ত নামায x ৪ পৃষ্ঠা = ২০ পৃষ্ঠা।
২০ পৃষ্ঠা = ১ পারা।
১ পারা x ৩০ দিন = পুরা কুরআন শরিফ খতম। দেখেছেন কত সহজ।
অনেকেই প্রতিদিন একপারা করে তিলাওয়াত করে রামাদান মাস এ আল-কুরআন খতম ও তিলাওয়াত করে থাকেন। তাই নিম্নে কুরআনের প্রতিটি পারা ভাগ করে দেয়া হয়েছে:
- পারা ১: সূরা ফাতিহা ১ – সূরা বাকারাহ ১৪১
- পারা ২: সূরা বাকারাহ ১৪২ – সূরা বাকারাহ ২৫২
- পারা ৩: সূরা বাকারাহ ২৫৩ – সূরা আল ইমরান ৯২
- পারা ৪: সূরা আল ইমরান ৯৩ – সূরা আন নিসা ২৩
- পারা ৫: সূরা আন নিসা ২৪ – সূরা আন নিসা ১৪৭
- পারা ৬: সূরা আন নিসা ১৪৮ – সূরা আল মায়েদা ৮১
- পারা ৭: সূরা আল মায়েদা ৮২- সূরা আল আনাম ১১০
- পারা ৮: সূরা আল আনাম ১১১ – সূরা আল আরাফ ৮৭
- পারা ৯: সূরা আল আরাফ ৮৮ – সূরা আল আনফাল ৪০
- পারা ১০: সূরা আল আনফাল ৪১ – সূরা আত তাওবা ৯২
- পারা ১১: সূরা আত তাওবা ৯৩ – সূরা আল হুদ ৫
- পারা ১২: সূরা আল হুদ ৬ – সূরা ইউসুফ ৫২
- পারা ১৩: সূরা ইউসুফ ৫৩ – সূরা ইব্রাহীম ৫২
- পারা ১৪: সূরা আল হিজর ১ – সূরা আন নাহল ১২৮
- পারা ১৫: সূরা বানি ইসরাইল ১- সুরা আল কাহফ ৭৪
- পারা ১৬: সুরা আল কাহফ ৭৫ – সূরা তাহা ১৩৫
- পারা ১৭: সূরা আল আনবিয়া ১ – সূরা আল হাজ্জ ৭৮
- পারা ১৮: সুরা আল মুমিনুন ১ – সূরা আলা ফুরকান ২০
- পারা ১৯: সূরা ফুরকান ২১ – সূরা আন নামল ৫৫
- পারা ২০: সূরা আন নামল ৫৬ – সূরা আল আঙ্কাবুত ৪৫
- পারা ২১: সূরা আল আঙ্কাবুত ৪৬- সূরা আল আযহাব ৩০
- পারা ২২: সূরা আল আযহাব ৩১ – সূরা ইয়াসীন ২৭
- পারা ২৩: সূরা ইয়াসীন ২৮ – সূরা আয যুমার ৩১
- পারা ২৪: সূরা আয যুমার ৩২ – সূরা ফুসিলাত ৪৬
- পারা ২৫: সূরা ফুসিলাত ৪৭ – সূরা আল জাথিয়া ৩৭
- পারা ২৬: সূরা আল আহকাফ ১ – সূরা আয যারিয়াত ৩০
- পারা ২৭: সূরা আয যারিয়াত ৩০ – সূরা আল হাদিদ ২৯
- পারা ২৮: সূরা আল মুজাদিলা ১ – সূরা আত তাহ্রিম ১
- পারা ২৯: সূরা আল মুল্ক ১ – সূরা আল মুরসালাত ৫০
- পারা ৩০: সূরা আন নাবা ১ – সূরা আন নাস ৬
প্রথম প্রকাশ: কুরআনের আলো।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন